এক লোভী ধনী বণিকের গল্প
একজন ধনী বণিক ছিল, যিনি অত্যন্ত লোভী স্বভাবের ছিলেন। তার কাছে প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল, কিন্তু দান-পুণ্য করতে একেবারেই রাজি ছিল না। একদিন সেই বণিক নিজের নৌকায় চেপে একা সফরে বের হলেন। তিনি পাশের গ্রামে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝনদীতে গিয়ে দেখলেন, তার নৌকায় একটি ফুটো হয়েছে এবং ধীরে ধীরে তাতে জল ঢুকছে।
বণিক সাঁতার জানতেন না, তাই তিনি খুব ভয় পেয়ে গেলেন। মৃত্যুভয়ে তিনি ঈশ্বরকে স্মরণ করতে লাগলেন। ঠিক তখনই তিনি দূরে একটি মাছ ধরার নৌকা দেখতে পেলেন।
তিনি জোরে চিৎকার করে বললেন, “ভাই, আমার নৌকা ডুবে যাচ্ছে! আমি সাঁতার জানি না। তুমি যদি আমার জীবন বাঁচাও, আমি তোমায় আমার সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দেবো।”
মাছ ধরিয়ে তাকে নিজের নৌকায় তুলে নিল। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বণিকের নৌকাটি পুরোপুরি ডুবে গেল। কিন্তু বণিকের প্রাণ বেঁচে গেল।
কিছুক্ষণ পর বণিক বলল, “ভাই, আমি যদি তোমায় আমার সব সম্পত্তি দিয়ে দিই, তাহলে আমার পরিবার কীভাবে চলবে? তাই আমি তোমায় অর্ধেক সম্পত্তি দেব।”
মাছ ধরিয়ে কিছু না বলে নৌকা চালাতে লাগল। কিছু সময় পর বণিক আবার বলল, “আমার সন্তানদেরও তো আমার সম্পত্তিতে অধিকার আছে। তাই আমি তোমায় অর্ধেক নয়, এক চতুর্থাংশ সম্পত্তি দিতে পারি।”
এইবারও মৎস্যজীবী কিছু বলল না। সে শুধু নৌকা চালিয়ে গেল। কিছু সময়ের মধ্যে নৌকাটি তীরে পৌঁছে গেল।
তীরে পৌঁছে বণিক ভাবল, “এই লোক আমার প্রাণ বাঁচিয়ে কিছু অতিরিক্ত কিছু করেনি। এটা তো মানুষের ধর্ম। এই সাহায্য করা তো মানবতার অংশ।”
এইভাবে ভাবতে ভাবতে সে মাছ ধরিয়েকে শুধু একটি স্বর্ণমুদ্রা দিল।
মৎস্যজীবী বলল, “এইটুকুও আমার দরকার নেই। আমি যা করেছি, সেটা আমার কর্তব্য। আপনি এটি আপনার কাছেই রাখুন।”
বণিক সেই স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে নিজের বাড়ির দিকে রওনা দিল।
শিক্ষা:
এই গল্পটি আমাদের শেখায়, যখনই কাউকে সাহায্য করার বা দান করার ইচ্ছা হয়, তখনই তা করে ফেলা উচিত। দেরি করলে, আমাদের মন বদলে যেতে পারে। তাই কোনও ভাল কাজ কখনও পিছিয়ে দেওয়া উচিত নয়।