Thursday, July 24, 2025
Homeছোট গল্পদুইটি ছোট গল্প

দুইটি ছোট গল্প

দুইটি ছোট গল্প

শিরোনাম : ইঁদুরের বৈঠক

লোকালয়ের কাছেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি পাহাড়। সেই পাহাড়ের গুহায় বাস করত একদল ইঁদুর। পাহাড়ের গুহায় কোনো খাবার পাওয়া যেত না বলে তাদের লোকালয়ে যেতে হতো। কিন্তু সেখানে থাকত একটি হুলো বিড়াল। বিড়ালের অত্যাচারে ইঁদুররা লোকালয় থেকে খাদ্য জোগাড় করতে না পেরে একসময় খুব অতিষ্ঠ হয়ে উঠল। বাঁচার একটা উপায় বের না করলে ইঁদুরের বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। বিড়ালের হাত থেকে কিভাবে বাঁচা যায়, এ বিষয়ে ইঁদুরের বৈঠক বসল। বৈঠকে অনেক ইঁদুরের সমাবেশ ঘটল। বাঁচার উপায় হিসেবে অনেকেই নানারকম পরামর্শ ও প্রস্তাব দেয়। কিন্তু কারো প্রস্তাবই সভাপতির আসনে বসা বৃদ্ধ ইঁদুরের পছন্দ হলো না।

অবশেষে এক বিজ্ঞ ইঁদুর অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বুক ফুলিয়ে বলল, আমি বলি কি, ওই হুলো বিড়ালের গলায় একটা ঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হোক, তাহলে ঘণ্টার আওয়াজ শুনেই আমরা সাবধান হতে পারব। এই প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত সব ইঁদুরই হাতে তুড়ি বাজিয়ে রাজি হয়ে গেল। বৈঠকের সভাপতি বৃদ্ধ ইঁদুর এতক্ষণ বসে বসে সবার পরামর্শ শুনছিল। কিন্তু এবার আর কিছু না বলে পারল না। এবার সে বলল, আমার প্রবীণ বিজ্ঞ বন্ধু যা বললেন তা খুবই বুদ্ধির কথা বটে, বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বেঁধে দিতে পারলে আমাদের উদ্যোগ সফল হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ওই ঘণ্টাটা বিড়ালের গলায় বাঁধতে যাবে কে?

সভাপতির কথায় বৈঠকের অন্যান্য ইঁদুর চুপ হয়ে গেল। কিন্তু ঘণ্টা বাঁধার উপায় হিসেবে কেউ কোনো উত্তর দিতে পারল না। পরস্পর মুখ চাওয়া চাওয়ি করেও উত্তর খুঁজে পেল না। আসলে প্রস্তাব দেওয়া যত সহজ, তা বাস্তবে রূপায়িত করা এত সহজ নয়।

শিরোনাম : শক্তি পরীক্ষা

সূর্য আর বাতাসের মধ্যে একদিন প্রচণ্ড তর্ক শুরু হলো। দুজনের মধ্যে কার শক্তি বেশি, এই ছিল তর্কের বিষয়। কেউ কারো কাছে হার মানতে চায় না বলে তর্কেরও শেষ হয় না। শেষ পর্যন্ত দুজনেই বুঝতে পারল, এভাবে তর্ক চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন। তাই কথা কাটাকাটি থামিয়ে হাতে-কলমে শক্তি পরীক্ষার একটা উপায় বের করা দরকার। হঠাৎ বাতাসের মাথায় একটা বুদ্ধির উদয় হলো, সে সূর্যকে উদ্দেশ্য করে বলল, ওই দেখো রাস্তা দিয়ে একটা লোক যাচ্ছে। যে ওই লোকটার শরীর থেকে জামা-কাপড় খোলাতে পারবে সেই হবে বিজয়ী। যে বিজয়ী হবে তাকে বেশি শক্তিশালী বলে মেনে নিতে হবে।

দুজনের মধ্যে ঠিক হলো, প্রথমে বাতাসই জামা খোলার চেষ্টা শুরু করবে। শুরু হলো। বাতাস তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বইতে শুরু করল। বাতাস বইতে শুরু করলে লোকটা আরো ভালোভাবে গায়ে জামা-কাপড় জড়িয়ে নিল। বাতাস তার শক্তি আরো বাড়িয়ে দিলেও কাজ হলো না। বাতাস আরো প্রস্তুতি নিয়ে এবার প্রবল জোরে বইতে শুরু করল। ঠাণ্ডা বাতাসে লোকটার শরীর কাঁপছিল। এবার সে আগের পরা জামার ওপর আরো একটা মোটা কোট পরে নিয়েছে। বাতাসের গতিবেগ থেকে রক্ষার জন্য লোকটি দুহাতে জামা-কাপড় চেপে ধরে রেখেছে। বাতাস তো হতাশ। লোকটার শরীর থেকে জামা-কাপড় খোলা বাতাসের পক্ষে সম্ভব হলো না।

এবার সূর্য তার শক্তির পরিচয় দিতে শুরু করল। বাতাসের শীতল প্রবাহের পর সূর্যের তাপে লোকটার বেশ আরাম বোধ হলো। আস্তে আস্তে সূর্যের উত্তাপ বাড়তে থাকলে লোকটা তার গায়ের কোটটা খুলে ফেলল। উত্তাপ যখন প্রচণ্ড থেকে প্রচণ্ডতর হয়ে উঠল, তখন আর তার সহ্য হচ্ছিল না। একে একে সে গায়ের সব জামা-কাপড় খুলে গা ঠাণ্ডা করতে পাশের এক নদীতে নেমে গেল। শক্তি পরীক্ষায় প্রমাণিত হলো, বাতাসের চেয়ে সূর্যের শক্তি অনেক বেশি।

GolpoKotha
GolpoKothahttps://www.golpakotha.com
Golpo Kotha - Read bengali all time favourite literature free forever in golpakotha.com গল্প কথা - আপনি যদি গল্পপ্রেমী হন তাহলে এই ওয়েবসাইটটি অবশ্যই আপনার জন্য
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments