নীতি শিক্ষামূলক গল্প – মাথার বোঝা
একদিন এক সন্ন্যাসী আর তাঁর শিষ্য রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। তারা হঠাৎ দেখলেন, নদীর ঘাটে এক মেয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে।
কাছে গিয়ে সন্ন্যাসী জিজ্ঞেস করলেন ,“মা, তুমি কাঁদছো কেন?”
মেয়েটি বলল, “আমি কাঠ কুড়াতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কখন সময় চলে যায়, আমি বুঝতে পারিনি, এর মধ্যে এসে দেখি সব লোক চলে গেছে নৌকাও নেই। নৌকা আর এর মধ্যে আসবেনা। এখানে একা থাকতে ভয় লাগছে। যে কোন সময় বাঘ ভাল্লুক আসতে পারে যদি বেচেও যাই তো সকালে কাউকে মুখ দেখাতে পারবনা, সকলে বলবে, কোথায় রাত কাটালাম কে জানে। এতবড় নদী সাঁতার ও কাটতে পারব না।”
সন্ন্যাসীর মন নরম হলো। তিনি মেয়েটিকে নিজের ঘাড়ে তুলে নিলেন আর সাঁতরে নদী পার করিয়ে দিলেন। তারপর শিষ্যকে নিয়ে আবার রওনা হলেন।
কিন্তু শিষ্য চুপচাপ মুখ ভার করে রইল। রাতে খাবার শেষে সন্ন্যাসী জিজ্ঞেস করলেন, “বৎস, তুই এত চুপ কেন?”
শিষ্য বলল, “গুরুজি, আপনি তো আমাকে বলেন নারীর কাছাকাছি যাওয়া পাপ, স্পর্শ করা নরকের দরজা খোলা। অথচ আপনি নিজেই মেয়েটিকে ঘাড়ে তুললেন!”
সন্ন্যাসী হেসে বললেন, “আমি তাকে ঘাড়ে তুলেছিলাম, আবার নদীর ওপারে নামিয়েও দিয়েছি। কিন্তু তুই তো এখনো তাকে মাথায় নিয়ে ঘুরছিস!”
শিক্ষা –
প্রয়োজনে কাউকে সাহায্য করা পাপ নয়। আসল ত্যাগ হলো কাজ শেষ হলে সেই চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া।