স্বার্থপর ঘোড়া এবং তার পরিণতির নীতিমূলক গল্প
একদা এক কৃষকের ছিল দুটি পোষা পশু। একটি ঘোড়া আর একটি গাধা। কৃষক যখনই বাজারে যেত, তখন গাধার পিঠে বোঝা চাপাত, আর ঘোড়াকে সে হালকা কাজে ব্যবহার করত।
একদিন কৃষক বাজারে রওনা হলো গাধার পিঠে ভারি বোঝা নিয়ে, আর ঘোড়ার পিঠে কিছুই দিল না। রোদের তাপে আর ভারের চাপে গাধা আর বোঝা বইতে পারছিল না, সে হাঁপাতে লাগল। কিছু দূর যেতে না যেতেই সে ঘোড়াকে বলল, ভাই ঘোড়া, আমি আর পারছি না। তোমার পিঠে তো কোনো বোঝা নেই। আমার বোঝা থেকে একটু নাও না। তাহলে আমিও বাঁচি, তুমিও বাঁচো।
কিন্তু ঘোড়া গাধার কথায় রাজি হল না। সে বলল, আমি কেন তোমার বোঝা বইব? আমার শরীর বোঝা নেয়ার জন্য নয়। তুই নিজের বোঝা নিজেই বইতে শিখ।
গাধা বোঝার ভার নিয়ে হাঁটতে লাগল, কিন্তু কিছুদূর যেতে না যেতেই বোঝার ভার সইতেনা পেরে গাধা পড়ে গেল মাটিতে। হাঁসফাঁস করতে করতে শেষমেশ সে মারা গেল।
কৃষক তো বিপদে পরে গেল। এখন তো বাজারে পৌঁছাতে হবে। গাধা নেই, তাই কৃষক গাধার সব বোঝা ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে দিল। শুধু তাই নয়, মরা গাধার চামড়াও ছাড়িয়ে সেটাও ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে দিল।
এবার ঘোড়ার অবস্থা খুব খারাপ হলো। এত বোঝা তার জীবনে কখনো বইতে হয়নি। ঘোড়া কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে বলল, আহা! আমি কী বড় ভুলই না করেছি। যদি গাধাকে শুরুতে একটু সাহায্য করতাম, তাহলে আজ এ রকম কঠিন শাস্তি পেতে হতো না। এখন তার সব বোঝা, এমনকি তার চামড়াও আমাকে বইতে হচ্ছে।
ঘোড়া তখন বুঝতে পারল, স্বার্থপরতা একদিন নিজের ক্ষতিই ডেকে আনে। ছোট্ট সাহায্য সময়মতো করলে বড় বিপদ থেকে হয়তো বাঁচা যেত।