টুপি বিক্রেতা ও বানরের গল্প:
এক ছিল টুপি বিক্রেতা। প্রতিদিন সকালে নিজের ঝুড়িতে টুপি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন। “টুপি নেবেন! টুপি!” তার এই ডাক গ্রামবাসীদের মন কাড়ত। গ্রীষ্মের এক উত্তপ্ত দিনে তিনি টুপি বিক্রি করতে করতে একটি বড় বনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেদিন প্রচণ্ড গরম ছিল। ক্লান্ত হয়ে তিনি বনের এক ছায়াঘেরা গাছের নিচে বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ঝুড়ি মাটিতে রেখে একটু বিশ্রাম করার জন্য শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর, ক্লান্তি তাকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করল।
এদিকে গাছের ডালে বসে ছিল কিছু চঞ্চল বানর। তারা ঝুড়ির রঙিন টুপিগুলো দেখে খুব আগ্রহী হয়ে উঠল। একে একে সবাই নেমে এসে ঝুড়ি থেকে টুপি নিয়ে মাথায় পরে নিল। পুরো গাছটি যেন রঙিন টুপির উৎসবে পরিণত হলো।
টুপি বিক্রেতা ঘুম ভাঙার পর দেখলেন, তার ঝুড়ি ফাঁকা। মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার করে বললেন, “ওহ! আমার সব টুপি গেল কোথায়?” তারপর তিনি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলেন, গাছের ডালে ডালে বানররা টুপি পরে বসে আছে। কেউ নাচছে, কেউ খেলছে। দৃশ্যটি মজার হলেও বিক্রেতার মাথায় হাত।
তিনি ভাবলেন, কীভাবে এই দুষ্ট বানরদের কাছ থেকে টুপিগুলো উদ্ধার করবেন। একপর্যায়ে তিনি মনে করলেন, বানররা যা দেখে তাই নকল করে। এটি তার একটি সুযোগ হতে পারে।
টুপি বিক্রেতা সঙ্গে থাকা নিজের টুপি খুলে মাথা থেকে নামিয়ে রাগান্বিত ভঙ্গিতে মাটিতে ছুঁড়ে ফেললেন। বানররা তাকে দেখে খুশি হয়ে একই কাজ করল। তারা একে একে মাথা থেকে টুপিগুলো খুলে মাটিতে ফেলে দিল। বিক্রেতা আনন্দে লাফিয়ে উঠে বললেন, “সাবাশ!”
তারপর তিনি দ্রুত সব টুপি একত্রিত করে ঝুড়িতে ভরলেন। এবার তিনি আর কোনো ঝুঁকি না নিয়ে তাড়াতাড়ি সেই জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন।
ফেরার পথে তিনি হাসতে হাসতে বললেন, “বুদ্ধি থাকলে বানরের সঙ্গেও টক্কর দেওয়া যায়!”
এভাবেই টুপি বিক্রেতা বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিজের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেলেন।
শিক্ষা: বুদ্ধি ও ধৈর্য দিয়ে বড় বড় সমস্যার সমাধান সম্ভব।